“”Education is not preparation of life, rather it is living” শিক্ষা শুধু জীবন প্রস্তুতির উপায় নয়, তা জীবন যাপনের প্রণালীও বটে। শিক্ষাকে জীবনব্যাপী অনুসরণীয় প্রক্রিয়া হিসেবে দেখতে হবে এবং অভিজ্ঞতাকে শিক্ষা লাভের স্বাভাবিক কৌশল হিসেবে বিবেচনায় রাখতে হবে। আধুনিক শিক্ষা দর্শনে শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিসত্তা বিকাশের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ব্যক্তি স্বতন্ত্র্যবোধ জাগ্রত করা এবং তাকে আত্মসত্তায় আস্থাবান করে তোলাই শিক্ষার প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।
ভবেরচর ওয়াজীর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে সুপরিকল্পিত পাঠ দান, সহ-পাঠ্যক্রমিক কর্মসূচির যথার্থ বাস্তবায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক গুণাবলীর সর্বোচ্চ উৎকর্ষ সাধন যাতে তারা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে এবং ভবিষ্যতে দেশ ও জাতিকে উপযুক্ত নেতৃত্ব দিতে পারে। বিদ্যালয়ের সার্বিক মানোন্নয়নে এলাকার সুধীজনের সুপরামর্শ এবং সার্বিক সহযোগিতা কামনা করি।
একটি সভ্য জাতি বিনির্মাণে শিক্ষার বিকল্প নেই। শিক্ষার রস ও মাধুর্য নিয়ে প্রতিটি মানুষ যখন নিজেকে সঠিক কাজে উৎসর্গ করে তখন জাতির কল্যাণ নিশ্চিত হয়। আবার শিক্ষা লাভের মধ্য দিয়ে মানুষ জ্ঞান অর্জন করে এবং অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে সে সত্য আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়।
অত্র বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই শিক্ষার গুণগত মানকে সমুন্নত করে আসছে। দক্ষ পরিচালনা কমিটির প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে অভিজ্ঞ, সৃজনশীল, উদ্যোমী ও জ্ঞানী শিক্ষক-শিক্ষিকার পরিচর্যায় তৈরি হচ্ছে অসীম জ্ঞানের এক নিকুঞ্জ। আর তা থেকে বেরিয়ে আসছে এক আত্মপ্রত্যয়ী জাতি। আমাদের বিদ্যালয়ের WEB SITE টি সকল শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের জন্য রয়েছে উন্মুক্ত। বিদ্যালয়ের সার্বিক মানোন্নয়নে জন্য যে কোনো পরামর্শ গ্রহণযোগ্য। ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের সুন্দর জীবন কামনা করছি।
মুন্সীগঞ্জ জেলার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ও সুপ্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিদ্যালয়টি মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার অন্তর্গত ভবেরচর ইউনিয়নের প্রাণকেন্দ্রে এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের প্রায় ১ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। ১৯৩৭ সালে স্থানীয় জমিদার মৌলভী মোঃ গরীব হোসেন চৌধুরী ও এলাকার বিশিষ্ট দানবীরদের প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথমে এর নামকরণ হয় ভবেরচর হাই স্কুল। গুটিকয়েক ছাত্র নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। শিক্ষক ছিলেন মাত্র পাঁচ জন। প্রথম প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন তৎকালীন দাউদকান্দি থানার ঐশারচর গ্রামের সৈয়দ কবির উদ্দিন আহমেদ। আর সহকারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন আলীপুর গ্রামের মৌলভী ইন্নত আলী সিকদার। কোন রকমের এফিলিয়েশন ( অধিভুক্তি) ছাড়াই বিদ্যালয়টি প্রায় দুই বছর যাবৎ চলতে থাকে। পরবর্তীতে বিদ্যালয়টি সরকারি অনুমোদনের জন্য তৎকালীন মুন্সীগঞ্জ মহকুমার প্রশাসক (এসডিও) এ. এইচ. এম. ওয়াজীর আলীর সার্বিক প্রচেষ্টায় কলকাতা থেকে স্বীকৃতি লাভ করে। উল্লেখ্য যে, এ.এইচ.এম ওয়াজীর আলী ছিলেন অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শের এ বাংলা এ.কে ফজলুল হকের ভাগ্নে ও জামাতা । তখন বিদ্যালয়টির নামকরণ করা হয় ওয়াজীর আলীর নামেই। ১৯৬৭ সালে এটি বাইলেটারেল হাই স্কুলে উন্নীত হয়। সে বছরই বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান শাখা চালু হয় । এর পূর্বে শুধু মানবিক শাখা চালু ছিল । ১৯৭৮ সালে চালু হয় বাণিজ্য শাখা। ফলে বিদ্যালয়টির নামকরণ করা হয় ভবেরচর ওয়াজীর আলী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে মোট জমির পরিমাণ ৪.৬০ একর। অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অদ্যবধি যুগোপযোগী পাঠদান পরিচালিত হয়ে আসছে বিদ্যালয়টিতে । খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ে রয়েছে এর সুনাম। এতে রয়েছে যথেষ্ট প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ ও অবকাঠামো। ব্রাকের সহযোগিতায় রয়েছে একটি সুবিশাল ও সমৃদ্ধশালী পাঠাগার। বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বে আছেন মোঃ আবুল হোসেন সরকার বিএসএস (অনার্স), এমএসএস (অর্থনীতি), বি- এড। বর্তমানে ১৮ জন শিক্ষক, ১ জন অফিস সহকারি ও ২ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী রয়েছে বিদ্যালয়টিতে । আর ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা হচ্ছে প্রায় এক হাজার তিনশত জন।